জলবায়ু ন্যায়বিচার

জলবায়ুর ন্যায়বিচার-১৪ নভেম্বর ২০২৩, সময় সকাল ১০.৪৫ টা

বাংলাদেশের ছয় ঋতু যেন হঠাৎ করেই উধাও! এইযে ঢাকা তে কি কোন শীত পড়েছে? ভাবা যায় এখন নভেম্বর মাস অথচ শীতের বালাই নেই! দোকানে সোয়েটার কম্বল উঠেছে! পিঠাও বিক্রি হচ্ছে কিন্তু চির চেনা শীত নাই!

গরমে কি অসহনীয় গরম, খরা হচ্ছে চাষের সময়ে ! আবার অসময়ে ঝড়- বন্যা হয়ে উপকুল ভেসে যাচ্ছে, আমাদের খাদ্য সঙ্কট বাড়ছে! বাজারে খাবারের কি দাম! বাংলাদেশে কি পরিমান নানা ধরনের খাদ্য আমদানি বাড়ছে জানিনা কেও খবর রাখে কিনা! সেইসাথে নতুন নতুন অদ্ভুত রোগ বাড়ছে ! দুনিয়াটা যেন খুব উশ্রিঙ্খল আচরন করছে!
এইযে নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে, আমাদের চিরচারিত চেনা পরিবেশ ও আবহাওয়া সব পরিবর্তন হয়ে গেছে! এইযে সমস্যা দেখতে পাচ্ছি এসবের পিছনে অনেক বড় কারন আছে। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন হয়ে গেছে! এবং স্বাভাবিক মাত্রা থেকে অস্বাভাবিক মাত্রায় গেলে আমাদের মত দেশ ডুবে যাবে পানিতে! জলবায়ুর ন্যায় বিচার নিশ্চিত না করলে মানুষের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে! আমরা এখন অস্তিত্ব শঙ্কটের দোরগোড়ায়!
ধনী বা উন্নত যে দেশগুলো আছে, যেমন চীন, আমেরিকা, জার্মান, ভারত, রাশিয়া ও জাপান এর মত দেশ গুলো অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন করছে! এর কারনে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনে অনেক বড় ভূমিকা রাখছে! এর মানে এই না বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশেরও ভুমিকা নেই! বাংলাদেশও দায়ী তবে সেটা বড় দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম! অনেকটা এমন ডাকাত না কিন্তু ছিঁচকে চোর! অপরাধের পরিমাণটা বোঝাতেই এই ব্যাখ্যা দিলাম!

তবে জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ সহ আরও অনেক দেশ ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে! তাদের মধ্যে আবার বাংলাদেশের সংকটটাই সবচে বেশি বলা যায়! বড় দেশগুলো টাকা কামানোর ধান্দায় পরিবেশের ক্ষতি করে আমাদের মতো নানা দেশগুলোকে নানারকম সমস্যা ও সঙ্কটে ফেলছে যেমন- সমুদ্র সীমা অতিক্রম করে পানি বাড়ছে যা উপকূলকে ভাসিয়ে দেবে, খরা বা অসময়ে বৃষ্টির কারনে খাদ্য সংকট হচ্ছে, পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, সাইক্লন-ঝড় বাড়ছে, মাটির ক্ষয় বাড়ছে, খাবার পানির সঙ্কট তৈরি হচ্ছে, মানুষজন ঘরবাড়ী ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে এমন নানা সমস্যা!

তো, এইযে আমরা ভুক্তোভুগি হচ্ছি এটারতো একটা বিহিত করতে হবে! আমাদেরকেতো মারার পায়তারা করছে! আমরা যে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছি তার জন্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবী করছি!! আমরা বাচার জন্য ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য জলবায়ুর এই শঙ্কট মোকাবেলায় জলবায়ুর ন্যায়বিচার দাবী করছি!

দায়ী দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বিভিন্ন ক্ষতিপূরণমূলক অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা যেন দেয় এবং বিশ্বের উষ্ণতা নিয়ন্ত্রনে রাখতে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমিয়ে আনে সেই দাবিগুলোকেই জলবায়ু ন্যায়বিচার (ক্লাইমেট জাস্টিস) বলা হয়!

আমি ও আমাদের সংগঠন গ্লোবাল ল’থিঙ্কারস সোসাইটি বাংলাদেশের ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যাসেম্বলিতে সংগঠক হিসেবে যুক্ত হয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি যথাসাধ্য দেশ, মানুষ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুনিশ্চিত জীবন পেতে!

জলবায়ু ন্যাবিচার নিশ্চিত করা শুধু আমার বিষয় না বা পরিবেশবাদীদের দায়িত্ব না বরং এটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

#জলবায়ু_ন্যায়বিচার #বাংলাদেশ #climatejustice #bangladesh…………।

ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যাসেম্বলি প্রস্তুতি – ১৪ নভেম্বর ২০২৩, সময় রাত ৮ টা

মাহির ফোন দিয়ে বলল, আপু, শরীফ ভাই ভলান্টিয়ারদের ব্যাবস্থাপনা নিয়ে চিন্তা করছিল, আপনি কিন্তু দায়িত্বটা নিতে পারেন! শরীফ ভাইকে জানালাম, আপনি চিন্তা করেন না, আমি দায়িত্ব নিয়ে কাজটা করে দিচ্ছি। যদিও আমি নিজে থেকে প্রোগ্রাম ও সেশন প্ল্যানিং-এর টিমে কাজ করব বলে জানিয়েছিলাম, এতে মিটিং শেষে আমাকে মজা করে খোঁচা দিয়ে বললেন যে যেখানে কাজ নাই সেটাইতো বেছে নিবা ! শরীফ জামিল ভাই আমার মেন্টর এবং উনি সেই দায়িত্ব হারে হারে পালন করেন! তবে উনি সত্য বলেছেন! সেশনে বেশি ভূমিকা নাই আমার কারন শরীফ ভাই নিজেই সেখানে কোঅরডিনেটর! আর উনি কোন কমিটিতে থাকলে একাই ১০০!

ভলান্টিয়ারদের সাথে কাজ করতে আমার নিজেরও ভালো লাগে! তাই নতুন দায়িত্ব পেয়ে ভালোই লাগছে! মনে মনে পরিকল্পনা করে ফেললাম কি করব, কিভাবে কাজ করব। আর আমার প্রিয় তরুণ নেতা মাহির আর শামস তো আছেই সাথে! সেই সাথে শরীফ ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের  তরুণ শিক্ষক মীর মোহাম্মাদ আলি স্যার কে! স্যার নিজেও সংগঠক এবং উদ্যমী। তার সাথে সামান্য কথা হতেই বেশ জমে গেল!

আমাদেরকে ৬০ জন দক্ষ ভলান্টিয়ারকে প্রস্তুত করতে হবে! আমাদের ফরমে কয়েক ঘন্টায় জমা পড়েছে ২০০ উপরে ভলান্টিয়ার দরখাস্ত! প্রস্তুতি চলছে জোরে সোরে! কয়েক দিনের ব্যাবধানে এত  বড় আন্তর্জাতিক একটা সম্মেলন নামানো চারটিখানি কথা না! যারা প্রোগ্রাম করেন তারা ভালো জানেন আয়োজকদের উপর কি চলে!

শরীফ জামিল ভাই একজন অসাধারণ নেতা আমার দেখা! যে এত কাজ করে যে মাঝে মাঝে উনাকে দেখলে ভয় লাগে যে এতো স্ট্যামিনা কোথায় পায় উনি! উনার কাজের চাপের বুলডোজার আবার তার সাথে কাজ করা মানুষগুলো উপর দিয়ে যায়! কারন উনার তীক্ষ্ণ বুদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করার সাধ্য কম মানুষেরই আছে! তবে যারাই উনার সাথে কাজ করে সেটা ভালবেসেই করে!

আশা করছি ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যাসেম্বলি একটা বড় ভূমিকা রাখবে আমাদের দেশের জন্য। 

 #ক্লাইমেট_জাস্টিস_অ্যাসেম্বলি #বাংলাদেশ  #climatejusticeassembly2023 #bangladesh #green_diary #raomansmita

Raoman Smita

Environment Activist, Global Leader, Life Coach, Author and Advocate in the Supreme Court of Bangladesh